ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং বন্দিবিনিময় নিয়ে দ্রুত চুক্তি সম্পন্ন করতে সফররত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে তাগাদা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হোয়াইট হাউসে স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার দুই নেতার বৈঠকে এ তাগাদা দেওয়া হয়।
বৈঠকের বিষয়ে হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাকি বিষয়গুলোতে বিরোধ কমিয়ে আনা, যত দ্রুত সম্ভব চুক্তি চূড়ান্ত করা এবং গাজায় দীর্ঘ মেয়াদে যুদ্ধ বন্ধের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মানবিক সংকট এবং ত্রাণ সরবরাহে প্রতিবন্ধকতা দূর করার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও আলোচনা করেন দুই নেতা।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্রেটিক পার্টির সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের সঙ্গেও বৈঠক করেন নেতানিয়াহু। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কমলা হ্যারিস বলেন, গাজায় গত ৯ মাসে যা কিছু ঘটেছে, তা ভয়াবহ।
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘মৃত শিশুদের ছবি এবং নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে মরিয়া হয়ে পালাতে থাকা ক্ষুধার্ত মানুষ, যাঁদের কাউকে কাউকে দ্বিতীয়, তৃতীয় কিংবা চতুর্থবারের মতো বাস্তুচ্যুত হতে হয়েছে, তাঁদের ছবি দেখা যাচ্ছে। এমন অবস্থায় এসব হৃদয়বিদারক ঘটনা থেকে আমরা দৃষ্টি ফিরিয়ে নিতে পারি না। এমন দুর্ভোগ দেখার পর আমরা চুপ থাকতে পারি না এবং আমি নীরব থাকব না।’
তবে কমলা হ্যারিস বলেন, ইসরায়েলের অস্তিত্ব ও নিরাপত্তার প্রতি তাঁর যে প্রতিশ্রুতি, তা ‘অটল’ আছে। কিন্তু যুদ্ধে ‘অনেক বেশি’ নিরীহ বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে উদ্বেগ জানান তিনি।
গাজায় যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাবে রাজি হওয়ার জন্যও নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কমলা হ্যারিস। তিনি বলেন, এই যুদ্ধ অবসানের সময় এসেছে।
এ ছাড়া স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও বৈঠকের কথা নেতানিয়াহুর। নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ট্রাম্প ইসরায়েলের কট্টর সমর্থক হিসেবে পরিচিত। অবশ্য নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের আগে ‘দ্রুত’ গাজা যুদ্ধ শেষ করতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা সত্ত্বেও রাফা, খান ইউনিসসহ গাজাজুড়ে ব্যাপক হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। হামলার মুখে দফায় দফায় বাস্তুচ্যুত হচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ বলেছে, চলমান এ যুদ্ধে প্রতি ১০ জনের ৯ জন ফিলিস্তিনিই জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
0 Comments